কোন একটা নতুন কাজ করিতে গেলে সমাজ প্রথমত গোলযোগে উপস্থিত করে এবং পরে সেই নতুন চালচলন সহিয়া লয় , তাহারই দ্টাক পাসি মহিলাদের পরিবর্তিত অবস্থার উল্লেখ করিয়াছি । পূর্বে তহারা ছত্র ব্যবহারেরও অধিকারিণী ছিলেন না, তারপর তাহাদের বাড়াবাড়িটা স্গীমা লঙ্গরন করিয়াছে, তবু তো পৃথীবি ধ্বংস হয় নাই । এখন পার্সি মহিলাদের পর্দা মোচন হইয়াছে সত্য, কিন্তু মানসিক দাসত্ব মোচন হইয়াছে কিট অবশ্যই হয় নাই । আর এ যে পর্দা ছাড়িয়াছেন, তাহা দ্বারা তাহাদের স্বকীয় বুদ্ষি-বিবেচনার তো কোন পরিচয় পাওয়া যায় না। পার্সি পুরুষগণ কেবল অঙ্গভাবে বিলাতী সভ্যতার অনুসরণ করিতে যাইয়া স্ত্রীদিগকে পর্দার বাহিরে আনিয়াছে, ইহাতে অবলাদের জীবনীশক্তির তো কিছু পরিচয় পাওয়া যায় না- তহারা যে জড়পদার্থ, সেই জড়পদার্থই আছেন । পুরুষ যখন তাহাদিগকে অন্ত:পুরে রাখিতেন, তাঁহারা তখন সেইখানে থাকিতেন । আবার পুরুষ যখন তাহাদের “নাকের দড়ি” ধরিয়া টানিয়া তাহাদিগকে যাঠে বাহির করিয়াছেন, তখনই তাহারা পর্দার বাহির হইয়াছেন । ইহাতে রমগীকৃলের বাহাদূরী কি? এক্ষপ পর্দা-বিরোধ কখনই প্রশংসনীয় নহে ।

মহিলাদের মানসিক দাসত্ব মোচনের অর্থ কি?

Created: 2 years ago | Updated: 1 year ago

হে কবি - কবিভক্ত এখানে কবিকে সম্বোধন করেছেন ।

নীরব কেন - উদাসীন হয়ে আছেন কেন? কেন কাব্য ও গান রচনায় সক্রিয় হচ্ছেন না। 

ফাল্গুন যে এসেছে ধরায় - পৃথিবীতে ফাল্গুন অর্থাৎ বসন্তের আবির্ভাব ঘটেছে।

তব বন্দনায় - তোমার রচিত বন্দনা-গানের সাহায্যে । অর্থাৎ বন্দনা-গান রচনা করে বসন্তকে কি  তুমি বরণ করে নেবে না? 

দক্ষিণ দুয়ার গেছে খুলি? -   কবির জিজ্ঞাসা- বসন্তের দখিনা বাতাস বইতে শুরু করেছে কি না। উদাসীন কবি যে তা লক্ষ করেননি তার এই জিজ্ঞাসা থেকে তা স্পষ্ট হয়।

 

বাতাবি নেবুর ফুল…অধীর আকুল  - বসন্তের আগমনে বাতাবি লেবুর ফুল ও আমের মুকুলের গন্ধে দখিনা বাতাস দিগ্বিদিক সুগন্ধে ভরে তোলে। কিন্তু উন্মনা কবি এসব কিছুই লক্ষ করেননি। কবির জিজ্ঞাসা তাঁর উদাসীনতাকেই স্পষ্ট করে।

এখনো দেখনি তুমি? - কবিভক্তের এ কথায় আমরা নিশ্চিত হই প্রকৃতিতে বসন্তের সব লক্ষণ মূর্ত হয়ে উঠেছে। অথচ কবি তা লক্ষ করছেন না ।

কোথা তব নব পুষ্পসাজ - বসন্ত এসেছে অথচ কবি নতুন ফুলে ঘর সাজাননি । নিজেও ফুলের অলংকারে সাজেননি ।

অলখ - অলক্ষ । দৃষ্টি অগোচরে। 

পাথার - সমুদ্র। 

বসন্তেরে আনিতে.... ফাল্গুন স্মরিয়া - কবি বন্দনা-গান রচনা করে বসন্তকে বর্ণনা করলেও বসন্ত অপেক্ষা করেনি। ফাল্গুন আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিতে বসন্ত এসেছে। 

করিলে বৃথাই -  ব্যর্থ করলে অর্থাৎ কবি-ভক্তের অনুযোগ-বসন্তকে কবি বরণ না করায় বসন্তের আবেদন গুরুত্ব হারিয়েছে 1

পুষ্পারতি - ফুলেল বন্দনা বা নিবেদন ।

পুষ্পারতি লভে নি কি ঋতুর রাজন? - ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ ও বন্দনা করার জন্য গাছে গাছে ফুল ফোটেনি? অর্থাৎ বসন্তকে সাদর অভ্যর্থনা জানানোর জন্যেই যেন ফুল ফোটে । 

মাধবী - বাসন্তী লতা বা তার ফুল ।

অর্ঘ্য বিরচন - অঞ্জলি বা উপহার রচনা । প্রকৃতি বিচিত্র সাজে সজ্জিত হয়ে ফুল ও তার সৌরভ উপহার দিয়ে বসন্তকে বরণ করে।

উপেক্ষায় ঋতুরাজে কেন কবি দাও তুমি ব্যথা  - কবিভক্ত বুঝতে পারছেন না, কবি যথারীতি সানন্দে বসন্ত বন্দনা না করে তার দিকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন কেন ।

কুহেলি - কুয়াশা ।

উত্তরী -  চাদর । উত্তরীয় । *

কুহেলি উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী - কবি শীতকে মাঘের সন্ন্যাসীরূপে কল্পনা করেছেন। যে সন্ন্যাসী কুয়াশার চাদর পরিধান করে আছে ।

পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে - শীত প্রকৃতিতে দেয় রিক্ততার রূপ গাছের পাতা যায় ঝরে । গাছ হয় ফুলহীন । শীতের এ রূপকে বসন্তের বিপরীতে স্থাপন করা হয়েছে। প্রকৃতি বসন্তের আগমনে ফুলের সাজে সাজলেও কবির মন জুড়ে আছে শীতের রিক্ততার ছবি । শীত যেন সর্বরিক্ত সন্ন্যাসীর মতো কুয়াশার চাদর গায়ে পত্রপুষ্পহীন দিগন্তের পথে চলে গেছে ।

তাহারেই পড়ে মনে - প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবির মন জুড়ে আছে শীতের রিক্ত ও বিষণ্ণ ছবি । কবির মন দুঃখ ভারাক্রান্ত। তার কণ্ঠ নীরব। শীতের করুণ বিদায়কে তিনি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। তাই বসন্ত তার মনে কোনো সাড়া জাগাতে পারছে না। বসন্তের সৌন্দর্য তার কাছে অর্থহীন, মনে কোনো আবেদন জানাতে পারছে না প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তাঁর প্রথম স্বামী ও কাব্যসাধনার প্রেরণা- পুরুষের আকস্মিক মৃত্যুতে কবির অন্তরে যে বিষণ্ণতা জাগে তারই সুস্পষ্ট প্রভাব ও ইঙ্গিত এ কবিতায় ফুটে উঠেছে।

Content added By
Content updated By

Related Question

View More